নির্জনের অভিযাত্রী (Sci-Fi)
Author: Robin Mehdee
February, 2025

১-মরুভূমি
আমি তখন মরুভূমির মাঝখানে একাই চলছিলাম। সারা দিগন্ত জুড়ে শুধু ধূসর বালি আর নিঃসঙ্গ নীরবতা। গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেই মনে পড়ে যাচ্ছে , আমি আসলে অন্য একটি গ্রহে এসেছি। সেই আশ্চর্য পরিবেশে আমি এক নতুন রহস্যের সন্ধানে এসেছিলাম—এক অদ্ভুত সংকেতের খোঁজে, যেটা নাকি এই শূন্য মরুভূমির মাঝখান থেকেই ভেসে আসছিল।

২-সংকেত
আকাশটা এখানে অদ্ভুতভাবে শান্ত, কিন্তু সূর্যের আলো যেন ঠিক পৃথিবীর মতো নয়—একটা ম্লান কমলা আভা চারপাশে ছড়িয়ে আছে। হঠাৎ ট্র্যাকিং ডিভাইসটা কাঁপতে শুরু করল, সংকেতের মাত্রা দ্রুত বাড়ছে। আমি গাড়ি থামিয়ে নিচে নামলাম। বালির নিচ থেকে যেন একটা মৃদু স্পন্দন অনুভব করলাম, ঠিক যেন কিছু একটা আমার উপস্থিতির অপেক্ষায় আছে।

৩-স্পন্দন
আমি ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করলাম, প্রতিটি পদক্ষেপে মনে হলো বালির নিচে যেন কিছু একটা নড়ে উঠছে। ট্র্যাকিং ডিভাইসের স্ক্রিনে সংকেতের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, কিন্তু আশপাশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। আমি হাঁটু গেড়ে বসে বালির ওপর হাত রাখলাম—একটা উষ্ণ স্পন্দন টের পেলাম, যেন কোনো মেশিন জীবন্ত হয়ে উঠছে। হঠাৎ, মাটির নিচ থেকে একটা ক্ষীণ আলো ফুঁটে উঠল, বালির স্তর সরিয়ে ধীরে ধীরে কিছু একটা দৃশ্যমান হতে লাগল।

৪-চিহ্ন
আমি শ্বাস আটকে তাকিয়ে থাকলাম। ধীরে ধীরে বালির স্তর সরিয়ে নিচ থেকে উঠে আসতে লাগল ধাতব এক কাঠামো, যেন মরুভূমির বুকের নিচে লুকিয়ে থাকা কোনো বিশাল যন্ত্রের অংশ। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো—এই ধাতব কাঠামোর উপর সূক্ষ্ম খোদাই করা চিহ্নগুলো! সেগুলো কোনো অজানা ভাষায় লেখা, তবু যেন আমি সেগুলোর অর্থ কিছুটা বুঝতে পারছি। মনে হলো যেন এগুলো কোনোবার্তা পাঠাচ্ছে—কিন্তু কার উদ্দেশ্যে?

৫-দরজা
হঠাৎ চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে উঠল, যেন সময় নিজেই থমকে গেছে। ধাতব বস্তুটার গায়ে খোদাই করা চিহ্নগুলো ধীরে ধীরে জ্বলজ্বল করতে লাগল, আর সঙ্গে সঙ্গে আমার ট্র্যাকিং ডিভাইস বিকট শব্দে সতর্কবার্তা দিতে শুরু করল। সংকেত এখন চরম মাত্রায় পৌঁছে গেছে। আমি দ্রুত এক পা পেছনে সরালাম, কিন্তু ঠিক তখনই মাটির নিচ থেকে যেন একটি অদৃশ্য শক্তি আমাকে টেনে নিচ্ছে। বালির স্তর কাঁপিয়ে ধাতব কাঠামোটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল, এবং তার মাঝখান থেকে আস্তে আস্তে খুলে গেল এক রহস্যময় দরজা—ভেতর থেকে উজ্জ্বল নীলচে আলো বেরিয়ে এলো, যেন আমাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে অজানা এক সত্যের দিকে।

৬-বিষ্ময়
আমি এক মুহূর্ত দ্বিধায় পড়লাম। এটা কি ফাঁদ? নাকি আসলেই কোনো বার্তা বহন করছে? আমার মন বলছিল, এটা এমন কিছু যা শুধু দেখার জন্য নয়, বোঝার জন্যও এসেছে। আমি ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম, দরজার কাছাকাছি গিয়ে ভেতরে উঁকি দিলাম। বিস্ময়ে আমার চোখ বিস্ফারিত হয়ে গেল—ভেতরে ছিল এক শূন্যতা, কিন্তু সেটার গভীরে যেন অসীম মহাবিশ্বের এক জানালা।
To be continued...